বাড়িতে একবার এইভাবে বিশেষ মসলা ব্যবহার করে বানিয়ে দেখুন হুবহু অনুষ্ঠান বাড়ির মত শুক্তো, যেই খাবে বলবে লা-জবাব

নিজস্ব প্রতিবেদন: শুক্তো অনেকেরই পছন্দের খাবারের তালিকায় রয়েছে। বাড়িতে গরম কালের সময় বেশিরভাগ এই রেসিপিটি তৈরি করা হয়ে থাকে। ভাতের প্রথম পাতে এটা খেতে কম বেশি অনেকেই পছন্দ করেন। আজ আমরা আপনাদের সাথে শুক্তো তৈরীর একটি বিশেষ পদ্ধতির শেয়ার করে নিতে চলেছি।

এই পদ্ধতিতে যদি আপনারা বানান তাহলে হুবহু অনুষ্ঠান বাড়ির মতন খেতে হবে। বিশেষ মসলা এবং কিছু জিনিসের প্রয়োগে রেসিপিটির স্বাদ হয়ে উঠবে একেবারে অনন্য। চলুন তাহলে খাদ্য রসিকদের জন্য আজকের এই বিশেষ রেসিপিটি শুরু করা যাক। কেমন লাগলো তা প্রতিবেদনের শেষে অবশ্যই কিন্তু একটা কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।

শুক্তো তৈরি করার সঠিক পদ্ধতি:

অসাধারণ এই রেসিপিটি করার জন্য প্রথমেই আপনাদের বেশ কয়েকটি সবজি নিয়ে নিতে হবে। এই সবজিগুলি হল উচ্ছে, পেঁপে, আলু, সজনে ডাটা, গাজর, বরবটি, মিষ্টি আলু, কাঁচাকলা এবং বেগুন। রান্নাটি করার জন্য প্রত্যেকটি সবজিকে কিন্তু আপনাদের একেবারে লম্বা করে কেটে নিতে হবে।

এবারে একটি পাত্রের মধ্যে আপনাদের সামান্য পরিমাণে রাঁধুনি ও আদা নিয়ে নিতে হবে। মিক্সার গ্রাইন্ডার এর সাহায্যে রাঁধুনি ও আদা দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন। তবে পেস্ট তৈরি করার সময় আপনাকে এর মধ্যে কালো সরষে, কিছুটা পরিমাণ পোস্ত, সাদা সরষে, পরিমাণ মতো লবণ এবং সামান্য জল ব্যবহার করতে হবে। তবে একবারে কিন্তু সমস্ত জল ব্যবহার করবেন না। পেস্ট তৈরি করার সময় অল্প অল্প করে জল দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

এবারে কড়াইতে আপনাদের পরিমাণ মতো সর্ষের তেল দিয়ে দিতে হবে। তেল ভালো করে গরম হয়ে যাওয়ার পর এখানে আপনাদের 10 থেকে 12 টি বড়ি দিয়ে দিতে হবে। বড়ি ভাজা হয়ে গেলে ওই তেলের মধ্যেই আপনাদেরকে উচ্ছে গুলিকে দিয়ে দিতে হবে। মিনিট দুয়েক সময় উচ্ছে ভেজে নেওয়ার পরে এখানে আপনাকে একইভাবে বেগুন ভেজে নিতে হবে। কড়াইতে বাকি থাকা তেলের মধ্যে কয়েকটি তেজপাতা এবং কিছুটা পরিমাণ পাঁচফোড়ন দিয়ে দিন।।

মসলা কিছুটা ভাজা হয়ে এলে আপনি কেটে রাখা আলু গুলিকে এর মধ্যে দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে নিন। আলু ভাজা হয়ে গেলে একে একে কাঁচকলা, রাঙা আলু এবং পেপেগুলিকে এর মধ্যে দিয়ে দিতে হবে। রান্নার এই পর্যায়ে আপনারা সামান্য পরিমাণে নুন ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। কিছুটা ভাজা হয়ে গেলে এবারে আপনাদের বরবটি, গাজর ও সজনে ডাঁটা গুলিকে দিয়ে দিতে হবে।

সমস্ত সবজিগুলিকে একত্র করে কিছুক্ষণ ভেজে নেওয়ার পরে রাধুনী আর আদার পেস্ট এর মধ্যে যোগ করে দিন। মনে রাখবেন এই রাধুনী আর আদার পেস্ট ছাড়া কিন্তু শুক্তো একেবারেই অসম্পূর্ণ। এখন এই পেস্ট দিয়ে নাড়াচাড়া করার পর সর্ষের আর পোস্তর পেস্ট এর মধ্যে ঢেলে দিতে হবে। কিছুক্ষণ সম্পূর্ণ মিশ্রণটিকে নাড়াচাড়া করার পর আপনারা এতে পরিমাণ মতো দুধ ব্যবহার করুন।

সব সময় চেষ্টা করবেন শুক্তো তৈরি করার জন্য একেবারে খাটি দুধ ব্যবহার করার। যেহেতু সবজিগুলিকে সেদ্ধ করতে হবে তাই দুধের সাথে সামান্য পরিমাণ জল আপনি যোগ করে দিতে পারেন। এই সময় আপনারা আরো একটু নুন হাফ চা চামচ চিনি ব্যবহার করতে পারেন তবে তার পরিমাপ যেন ঠিক থাকে। যতক্ষণ এই রান্নাটি ফুটতে থাকবে ততক্ষণ আমরা আরও একটি মসলা তৈরি করে নেব। এই মশলাটি তৈরি করার জন্য প্যানে কিছুটা পরিমাণ জিরে, পাঁচফোড়ন এবং রাধুনী দিয়ে দিতে হবে। লো ফ্ল্যেমে এই মসলাটিকে আপনাদের ড্রাই রোস্ট করে নিতে হবে।

এবার মসলা ঠাণ্ডা করে আপনাদের একটি পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে।। অন্যদিকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর শুক্তো প্রস্তুত হয়ে গেলে ভেজে রাখা বড়ি, আচ্ছা আর বেগুন দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করতে থাকুন। বড়ি আর বেগুন ঘেঁটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই একেবারে সবশেষে এই দুটি উপাদানকে ব্যবহার করা হলো।।

সর্বশেষ ধাপে শেষ তৈরি মশলাটিকে এই মিশ্রণের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে আরো চার থেকে পাঁচ মিনিট সময় পর্যন্ত ফুটিয়ে গরম গরম নামিয়ে নিন। গরম ভাতের সাথে এই শুক্তোর রেসিপি কিন্তু খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু লাগবে। এই পদ্ধতিতে আপনারা যদি নিয়মিত রান্না করতে পারেন তাহলে কিন্তু একেবারে অনুষ্ঠান বাড়ির মতন স্বাদ চলে আসবে।

Back to top button