বাড়িতে এই সহজ পদ্ধতিতে বানিয়ে নিন মজাদার চিংড়ি পোলাও রেসিপি; বাচ্চা থেকে বড় সবাই করবে পছন্দ









নিজস্ব প্রতিবেদন: চিংড়ি মাছ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু রেসিপি কিন্তু তৈরি করে খাওয়া যেতে পারে। আপনারা হয়তো কম বেশি সকলেই সেই রেসিপিগুলো বানিয়েছেন। যেমন ধরুন চিংড়ি মালাইকারি, চিংড়ির ভর্তা অথবা লাউ চিংড়ি। তবে আজ আমরা পাঠক বন্ধুদের জন্য নিয়ে চলে এসেছি একটি ইউনিক রেসিপি।
কোন বিশেষ দিনে অথবা বাড়িতে অতিথি আসলে আপনারা কিন্তু সহজেই এই ইউনিক রেসিপিটি বানিয়ে তৎক্ষণাৎ পরিবেশন করে সকলের মন জয় করে নিতে পারেন। রেসিপিটি হল মজাদার স্বাদের চিংড়ি পোলাও । খুব সহজেই আপনারা এটা বাড়িতে তৈরি করে নিতে পারবেন। আসুন আর সময় নষ্ট না করে আমাদের আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদনটা শুরু করা যাক।




কিভাবে চিংড়ি পোলাও তৈরি করবেন?
চিংড়ি পোলাও তৈরি করার জন্য আপনাদের প্রথমেই হাফ কেজি পরিমাণ বাগদা চিংড়ি নিয়ে নিতে হবে। তারপর ভালো করে ধুয়ে কেটে এটাকে পরিষ্কার করে পিঠের মধ্যে যে রগ থাকে সেটাকে সরিয়ে দিতে হবে। এবারে আপনাদের
সামান্য পরিমাণে লবণ আর লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে চিংড়ি মাছ গুলোকে ম্যারিনেট করে নিতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই মাছ বা মাংস ম্যারিনেট করার পরে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হয় ,তবে চিংড়ি মাছের ক্ষেত্রে সেটা করার প্রয়োজন নেই।




অন্যদিকে পোলাও তৈরি করার জন্য আপনাদের নিয়ে নিতে হবে বাসমতি চাল। মোটামুটি ঘন্টা দুয়েক আগে এই বাসমতি চাল আপনাদের পরিমাণ মতন জল দিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ঘন্টা দুয়েক সময় পরে ভালো করে ধুয়ে নিয়ে জল ঝরিয়ে নিতে হবে। তারপর আপনাদের গ্যাস ওভেনের উপর একটি প্যান বসিয়ে ২ চামচ পরিমাণ সয়াবিন তেল দিয়ে দিতে হবে । তেল ভালো করে গরম হয়ে গেলে তার মধ্যে চিংড়ি মাছ গুলোকে কিছুক্ষণ সময় পর্যন্ত ফ্রাই করে নিন। খুব বেশিক্ষণ কিন্তু এটা করবেন না তাহলে চিংড়ি মাছ শক্ত হয়ে যাবে।
মাছ ভাজা হয়ে গেলে সেটাকে আলাদা পাত্রে উঠিয়ে ওই কড়াই এর মধ্যেই আরো কিছুটা পরিমাণ সয়াবিন তেল দিয়ে দিন। এবারে তেলের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে দুটো তেজপাতা, চার টুকরো দারচিনি, চারটে এলাচ এবং চারটে লবঙ্গ। কিছুক্ষণ এই মসলাগুলোকে ভেজে নিলে কিন্তু দেখবেন খুব সুন্দর গন্ধ বেরোতে শুরু করেছে। আপনার এই পর্যায়ে আপনাকে একটি কুচি করে রাখা পেঁয়াজ কড়াইতে দিয়ে দিতে হবে।




সোনালী অবস্থায় যতক্ষণ পর্যন্ত না পেঁয়াজের রঙ ধরছে ততক্ষণ এটাকে ভেজে নিন। পেঁয়াজ একটু নরম হয়ে আসলে এর মধ্যে দিয়ে দিন দেড় চা চামচ পরিমাণ আদা বাটা, দুই চা চামচ পরিমাণ রসুন বাটা, দুই চা চামচ পরিমাণ টমেটো সস। পেঁয়াজের সাথে যাবতীয় মসলাকে এবার আরো একবার ভালো করে কষিয়ে নিতে হবে। কষিয়ে নেওয়ার ফলে কিন্তু আদা রসুনের কাঁচা গন্ধটা সহজেই চলে যাবে।
এবারে এই মিশ্রণের মধ্যে আপনাদের দিয়ে দিতে হবে দুই টেবিল চামচ পরিমাণ টক দই। টক দই মেশানোর পর মসলা টাকে আরও বেশিক্ষণ সময় পর্যন্ত ভালো করে কষিয়ে নিন। মসলা কষানোর জন্য আপনারা এখানে সামান্য পরিমাণে নারকেলের দুধ ব্যবহার করতে পারেন।




তারপর এই মিশ্রণের মধ্যে যোগ করে দিন এক চা চামচ পরিমাণ জিরা গুঁড়ো ,এক চা চামচ পরিমাণ ধনে গুঁড়ো, এক চা চামচ পরিমাণ শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো, এক চা চামচ পরিমাণ গরম মসলার গুঁড়ো এবং স্বাদমতো লবণ। ৫ থেকে ৬ টি কাঁচা লঙ্কা এর মধ্যে দিয়ে দিন। সমস্ত উপকরণ দিয়ে দেওয়ার পরে আরো পাঁচ থেকে ছয় মিনিট পর্যন্ত এই মসলা আপনাদের কষিয়ে নিতে হবে।
মসলা খুব সুন্দর একটা রং ধরে তেল ছাড়তে শুরু করে দিলে,সামান্য চিনি ছড়িয়ে আগে থেকে ভেজে রাখা চিংড়ি মাছ গুলোকে এর মধ্যে দিয়ে দিন। যেহেতু এখানে টক দই ব্যবহার করা হয়েছে তাই টক ভাব দূর করার জন্য সামান্য চিনি আপনারা ব্যবহার করবেন।




বেশ কিছুক্ষণ সময় পর্যন্ত নাড়াচাড়া করে আপনাদের চিংড়ি মাছ সহ মিশ্রণটিকে রান্না করে নিতে হবে। ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে কিছুক্ষণ সময় পর্যন্ত ঢাকা দিয়ে রেখে দিন। মোটামুটি ৭ থেকে ৮ মিনিট সময়ের মধ্যেই মাছ কিন্তু ভালোভাবে রান্না হয়ে যাবে। এই পর্যায়ে মাছগুলিকে আপনাদের উঠিয়ে নিতে হবে।
তারপর আগে থেকে আপনারা যে বাসমতি চাল ধুয়ে রেখেছিলেন সেটাকে এই মসলার মধ্যে দিয়ে দিন। ৫ থেকে ৬ মিনিট সময় পর্যন্ত মিডিয়াম আঁচে আপনাদের চাল ভেজে নিতে হবে। আপনারা যত ভালোভাবে চাল ভাজতে পারবেন ভাত তথা পোলাও ঠিক ততটাই ঝরঝরে হবে। মোটামুটি পাঁচ থেকে ছয় মিনিট সময়ের মধ্যেই দেখবেন চালের রং চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে। এই সময় আপনাদের ফুটন্ত গরম জল এর মধ্যে যোগ করে দিতে হবে।




আড়াইকাপ পরিমাণ গরম জল এবং এক কাপ পরিমাণ নারকেলের দুধ ব্যবহার করুন। এবারে এর মধ্যে আরো চারটে কাঁচা লঙ্কা দিয়ে দিন। পোলাও বা বিরিয়ানিতে কিন্তু আপনারা সহজেই আলু বোখারা ব্যবহার করতে পারেন। তারপর এর মধ্যে দিয়ে দিন ৫-৬ টি মতন কাজুবাদাম আর কিসমিস। আলতো হাতে এবার চালসহ সমস্ত উপকরণকে নাড়াচাড়া করতে থাকুন। এই সময় অবশ্যই লবণ ঠিক আছে কিনা যাচাই করে নিতে ভুলবেন না। ঢাকা দিয়ে পাঁচ মিনিটের জন্য অপেক্ষা করুন।
জল কিছুটা ঘন হয়ে এলে সামান্য পরিমাণ শাহী জিরা আর রান্না করে রাখা চিংড়ি মাছগুলোকে এর মধ্যে যোগ করে দিন। তারপর মিডিয়াম আঁচে আরো বেশ কিছুক্ষণ সময় নাড়াচাড়া করতে থাকুন। সবশেষে এক টেবিল চামচ পরিমাণ গোলাপ জল আর এক টেবিল চামচ পরিমাণ কেওড়া জল ছড়িয়ে দিন। এটাই খুব সুন্দর একটা ফ্লেভার আসবে। কিছুক্ষণ ঢাকা দিয়ে স্ট্যান্ডিং টাইম পর্যন্ত অপেক্ষা করে তারপর গরম গরম পরিবেশন করুন। খেতে কেমন লাগলো তা অবশ্যই একটা কমেন্ট করে আমাদের জানাতে ভুলবেন না।











