খুব সহজেই বাড়িতে বানিয়ে নিন এই বিশেষ চার ধরনের মসলা, যে কোন খাবারের স্বাদ বদলে যাবে মুহূর্তেই









নিজস্ব প্রতিবেদন: আমাদের প্রত্যেকের বাড়িতেই দৈনন্দিন বিভিন্ন রান্নায় নানান ধরনের মসলা ব্যবহার করা হয়ে থাকে যা রান্নার স্বাদ বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আজকাল অনেকেই কিন্তু বাজার থেকে কেনা প্যাকেটের মসলা এই কাজে ব্যবহার করছেন। কিন্তু সমস্যা হল বাজারের এই প্যাকেজের মসলাগুলোতে খুব একটা ভালো স্বাদ থাকে না।
সেই জায়গায় বাড়িতে যদি আপনারা একটু সহজ পদ্ধতিতে মসলা তৈরি করে নিতে পারেন তাহলে খাবার খেতেও ভালো লাগবে আর শরীরের কোন ক্ষতিও হবে না। আজ আমরা পাঠক বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে নিতে চলেছি চার ধরনের মসলার রেসিপি যার মধ্যে রয়েছে বিরিয়ানি মসলা, মাংসের মসলা, মাছের মসলা এবং মুরগির মসলা। চলুন এগুলো বানানোর পদ্ধতি জেনে নেওয়া যাক।




বিরিয়ানি মসলা তৈরীর পদ্ধতি:
প্রথমেই আপনাদের মসলাগুলোকে রোস্ট করে নিতে হবে।তার জন্য একটি বড় প্লেটে আপনাদের দিয়ে দিতে হবে গোটা ধনে হাফ কাপ, এরপর দিতে হবে গোটা জিরে, কালো জিরে, মিষ্টি জিরে 1 টেবিল চামচ, এলাচ প্রায় ২৫ টা, লবঙ্গ 1 টেবিল চামচ, কালো এলাচ তিনটে, জয়ত্রী ফুল তিনটে, তারা মৌরি দুইটি, দারচিনি দুইটি, শুকনো লঙ্কা 5 থেকে 6টা, তেজপাতা তিনটে।




এরপর খুবই লো হিটে আপনাদের মসলাগুলোকে রোস্ট করে নিতে হবে। মসলাগুলো যে খুব সুন্দর ভাজা হয়েছে সেটা বোঝার জন্য আপনারা এই মসলাগুলো থেকে যেকোনো একটি তেজপাতা তুলে যদি দেখেন সেটা একেবারে মুচমুচে হয়ে গিয়েছে তাহলে বুঝে যাবেন কিন্তু রোস্ট সম্পূর্ণ। শুকনো খোলায় এটাকে ভেজে নেওয়ার পরে একটা প্লেটের মধ্যে এই মসলাটাকে আপনাদের নিয়ে নিতে হবে।
অবশ্যই কিন্তু কখনো এই মসলা আপনারা গরম অবস্থায় ব্লেন্ড করবেন না তাহলে সমস্যা হতে পারে। মসলার সম্পূর্ণরূপে ঠান্ডা করে একটি ব্লেন্ডারে নিয়ে নিতে হবে। তারপর ভালো করে এটাকে গুঁড়ো করে নিন। এবারে কয়েকটি ছোট এলাচ আর দারচিনি গুঁড়ো করে নিয়ে এর মধ্যে মিশিয়ে দিতে হবে। এরপর এতে একটি তেজপাতা ছোট করে ভেঙে নিয়ে যোগ করে দিন এবং দিয়ে দিন সামান্য পরিমাণে কেওড়া জল।




সমস্ত মসলা ভালোভাবে তৈরি করে নিলেই কিন্তু তৈরি হয়ে যাবে পারফেক্ট স্বাদের বিরিয়ানি মসলা। এরপর একটি কাঁচের জারের মধ্যে খুব সহজেই কিন্তু দীর্ঘদিন পর্যন্ত এই মসলা আপনারা সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন।চাল আর মাংস মিলিয়ে এক কেজি পরিমাণ বিরিয়ানির জন্য আপনারা তিন টেবিল চামচ বিরিয়ানির মসলা ব্যবহার করতে পারেন।
মাছের মসলা তৈরির পদ্ধতি:
মাছের মসলা তৈরি করার জন্য আগের মতোই একটি ওভেনে আপনাদের প্যান বসিয়ে দিতে হবে। তারপর এতে দিয়ে দিতে হবে আস্ত ধনে এক টেবিল চামচ, আস্ত জিরে এক টেবিল চামচ, মৌরি ২ টেবিল চামচ, তেজপাতা চারটে। তারপরে ঠিক লো টু মিডিয়াম হিটে আপনাদের মিনিট দুয়েক সময় পর্যন্ত এই সমস্ত মসলাগুলোকে কিন্তু শুকনো খোলায় ভেজে নিতে হবে।




তেজপাতা যদি আবারও সেরকমই মুচমুচে হয়ে যায় তাহলে বুঝবেন মসলা তৈরি হয়ে গিয়েছে। মশলার মধ্যে এবার আপনাদের সামান্য পরিমাণে, প্রায় দু চামচ জোয়ান দিয়ে দিতে হবে। মোটামুটি আরও মিনিট দু এক সময় রোস্ট করার পরে ব্লেন্ডারে আপনাদের এই মসলাগুলো গুঁড়ো করে নিতে হবে। তবে অবশ্যই ঠান্ডা হওয়ার পরে গুঁড়ো করবেন।




গুড়ো হয়ে যাওয়ার পরে এতে আপনারা প্রায় এক থেকে দুই চামচ পরিমাণ কর্নফ্লাওয়ার যোগ করে দিতে পারেন। মোটামুটি আরো মিনিট খানেক সময় ব্লেন্ড করে নিলেই কিন্তু সমস্ত উপকরণ একসাথে মিশে তৈরি হয়ে যাবে মাছের মসলা। ১ কেজি পরিমাণ মাছ ভাজা বা রান্না করার জন্য আপনাদের কিন্তু তিন টেবিল চামচ পরিমাণ মাছের মসলার প্রয়োজন হবে।
চিকেন মশলা বা মুরগির মসলা তৈরি করার পদ্ধতি:
এই মসলা তৈরি করার জন্য আপনাদের প্যানের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে গোটা ধনে, গোটা জিরে, মৌরি 2 টেবিল চামচ, শাহী জিরা এক টেবিল চামচ,কালো গোলমরিচ এক টেবিল চামচ, সবুজ এলাচ ২০ টা, জয়ত্রী ফুল দুইটা, জায়ফল একটা, লবঙ্গ দারচিনি, কালো এলাচ ৪ টে, তেজপাতা দশটা এবং কাজুবাদাম ২০ গ্ৰাম। ভালো করে লো টু মিডিয়াম ফ্লেমে আপনাদের কিন্তু মসলাগুলোকে ভেজে নিতে হবে।




তারপরে ভালো করে ঠান্ডা হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকুন। যতক্ষণ এটা ঠান্ডা হচ্ছে ততক্ষণ একটি প্যানের মধ্যে আবারও কিছু পরিমাণে শুকনো লঙ্কা নিয়ে নিন। কয়েক মিনিট ভেজে নিতে হবে। তারপরে এই শুকনো লঙ্কাগুলিকেও ওই মসলার উপকরণের মধ্যে নিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। ব্যাস তাহলেই তৈরি হয়ে যাবে মুরগি মসলা।
জাদুকরি মাংসের মশলা তৈরীর পদ্ধতি:
অসাধারণ স্বাদের এই চিকেন মশলা তৈরি করার জন্য আপনাদের একটি গ্যাস ওভেনের উপর প্যান বসিয়ে গরম করে নিতে হবে। তারপর এর মধ্যে কয়েক টুকরো দারচিনি দিয়ে দিন। এরপর দিয়ে দিন মিষ্টি জিরা বা মৌরি তিন টেবিল চামচ, ২ টেবিল চামচ মেথি, কালো জিরে এক টেবিল চামচ, গোলমরিচ আর টেবিল চামচ, এলাচ ১ টেবিল চামচ, লবঙ্গ ১ চা চামচ, কালো এলাচ, জায়ফল দুইটা, জয়িত্রিফুল দুইটা, তারা মৌরি দুইটা, ছ থেকে সাতটা তেজপাতা।
এবারে লো টু মিডিয়াম হিটে আপনাদের সমস্ত উপকরণ গুলিকে আবারো ভালো করে ভেজে নিতে হবে। যদি আপনাদের উপাদান গুলির পরিমাণ বুঝতে কোনো রকম অসুবিধা হয় তাহলে অবশ্যই সঙ্গে থাকা ভিডিওটি কিন্তু ভালো করে দেখে নেবেন। এবারে বেশ কিছুক্ষণ সময় ভেজে নেওয়ার পরে আপনারা এটাকে নামিয়ে নিন। তারপরে খুব সহজেই ঠান্ডা হবার পর এটাকে ব্লেন্ডারে গুড়ো করে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে অসাধারণ স্বাদের এই মাংসের মসলা। চিকেন অথবা মাটন তৈরির জন্য খুব সহজেই আপনারা এটাকে ব্যবহার করতে পারবেন।











